জাবেদা হল হিসাবের প্রাথমিক বই।
লেনদেন সংগঠিত হওয়ার সাথে সাথে তারিখের ক্রমানুসারে ডেবিট ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে হিসাবের যে প্রাথমিক বইতে লিপিবদ্ধ করা হয় তাকে জাবেদা বই বলা হয়।
পণ্য ক্রয় সংক্রান্ত জাবেদা:
ক্রয় হল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের খরচ, খরচ বৃদ্ধি পেলে ডেবিট হয়। শুধুমাত্র পণ্যদ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রয় হিসাব ডেবিট হবে। পণ্যদ্রব্য বলতে বোঝায় কোন প্রতিষ্ঠান যা নিয়ে ব্যবসায় করে অর্থাৎ পুনরায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যা ক্রয় করে । কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান যদি আসবাবপত্র নিয়ে ব্যবসায় করে তাহলে আসবাবপত্র তার নিকট পণ্য। উক্ত প্রতিষ্ঠান যতবার আসবাবপত্র ক্রয় করবে ততবার ক্রয় হিসাব ডেবিট হবে । ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে নগদে, চেকে, কার্ডে, ধারে ও বিলের মাধ্যমে পণ্য দ্রব্য ক্রয় করা হয়।
পণ্য ক্রয় সংক্রান্ত লেনদেনের জাবেদা দাখিলা প্রদানের নিয়ম:
যে কোন মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করলে ক্রয় হিসাব ডেবিট
ক্রেডিটের জন্যঃ-
নগদে পণ্য ক্রয় করলে নগদান হিসাব ক্রেডিট
ধারে পণ্য ক্রয় করলে, বিক্রেতার নাম না থাকলে পাওনাদার হিসাব/ প্রদেয় হিসাব ক্রেডিট
ধারে পণ্য ক্রয় করলে, বিক্রেতার নাম থাকলে পাওনাদার (সংশ্লিষ্ট নাম) হিসাব ক্রেডিট
চেকে পণ্য ক্রয় করলে ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট
স্বীকৃত বিলের মাধ্যমে/প্রদেয় বিলের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করলে প্রদেয় বিল হিসাব ক্রেডিট
মালিকের ব্যাক্তিগত অর্থ দ্বারা পণ্য ক্রয় করলে মূলধন হিসাব ক্রেডিট
এবার কিছু উদাহরণ লক্ষ্য করা যাক
লেনদেনঃ নগদে পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ ধারে/বাকিতে পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
পাওনাদার/ প্রদেয় হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ জনাব শাহিনের নিকট হতে পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
পাওনাদার (শাহিন হিসাব) ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ চেকের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ স্বীকৃত বিলের মাধ্যমে পণ্য ক্রয়/প্রদেয় বিলের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
প্রদেয় বিল হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ মালিকের ব্যাক্তিগত অর্থ দ্বারা কারবারের জন্য পণ্য ক্রয় ৫০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০ টাকা
মূলধন হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ পুনরায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্য যন্ত্রপাতি ক্রয় ৫০০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৫০০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনের প্রকৃতি অনুযায়ী অনেক সময় একাধিক ডেবিট বা ক্রেডিট পক্ষ থাকতে পারে সেক্ষেত্রে অবশ্যই মোট ডেবিট টাকার পরিমাণ মোট ক্রেডিট টাকার পরিমাণের সমান হবে।
কিছু উদাহরণ
লেনদেনঃ
১০০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করে ৫০০০ টাকা নগদে প্রদান ।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ১০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
পাওনাদার/ প্রদেয় হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
জনাব পারভেজের নিকট হতে ১০০০০ পণ্য ক্রয় করে ৫০০০ টাকা প্রদান।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ১০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
পাওনাদার (পারভেজ) হিসাব ক্রেডিট ৫০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
জনাব শাহিনের নিকট থেকে ১০০০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করে ২০০০০ টাকা নগদে, ৫০০০০ টাকা চেকে এবং অবশিষ্টাংশের জন্য বিলে স্বীকৃতি দেওয়া হল।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ১০০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ২০০০০ টাকা
ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট ৫০০০০ টাকা
প্রদেয় বিল হিসাব ক্রেডিট ৩০০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
জনাব আমিরের নিকট হতে ২০০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করে ৫০% নগদে ও ৩০ % চেকে দেওয়া হল।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ২০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ১০০০০ টাকা
ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট ৬০০০ টাকা
পাওনাদার (আমির) হিসাব ক্রেডিট ৪০০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
পণ্য ক্রয় ২০০০০ টাকা যার ৫০% চেকে।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ২০০০০ টাকা
ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট ১০০০০ টাকা
পাওনাদার হিসাব ক্রেডিট ১০০০০ টাকা
[/box]
কারবারী বাট্টায় পন্য ক্রয়ঃ নগদে বা বাকিতে পন্যদ্রব্য ক্রয় বিক্রয়ের সময় পণ্যদ্রব্যের মোট মূল্য হতে সরাসরি যে ছাড় বা বাট্টা পাওয়া যায় বা দেওয়া হয় তাকে কারবারী বাট্টা বলে। এই কারবারী বাট্টা বিক্রেতার নিকট বিক্রয় বাট্টা এবং ক্রেতার নিকট ক্রয় বাট্টা।যেহেতু ক্রেতা বা বিক্রেতা কোন পক্ষই এই বাট্টার হিসাব রাখেনা তাই কারবারী বাট্টা হিসাবভুক্ত করা হয়না। পণ্যদ্রব্যের মোট মূল্য হতে ছাড় বা বাট্টা বাদ দেওয়ার পর প্রকৃত যে মূল্যে ক্রয় বিক্রয় হয় তাই হিসাবভুক্ত করা হয়।
কয়েকটি উদাহরণ
লেনদেনঃ
জনাব শাহিন ট্রেডার্সের নিকট হতে ১০% বাট্টায় পণ্য ক্রয় ১০০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৯০০০ টাকা
পাওনাদার(শাহিন) হিসাব ক্রেডিট ৯০০০ টাকা
(গণনাঃ প্রকৃত ক্রয়মূল্য = ১০০০০ – ১০০০০×১০%= ১০০০০ -১০০০=৯০০০ টাকা)
[/box]
লেনদেনঃ
জনাব পারভেজের নিকট হতে ১০% বাট্টায় ৬০০০ টাকার পণ্য নগদে ক্রয়।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৫৪০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৫৪০০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
পুনরায় বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাবনার এসকে বস্ত্র বিতান হতে ৫% বাট্টায় কাপড় ক্রয় ৭০০০০ টাকা।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৬৬৫০০ টাকা
পাওনাদার(এসকে বস্ত্রবিতান) হিসাব ক্রেডিট ৬৬৫০০ টাকা।
[/box]
লেনদেনঃ
পণ্য ক্রয় ৩০০০ টাকা, বাট্টা ৫%।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ২৮৫০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ২৮৫০ টাকা
[/box]
লেনদেনঃ
জনাব হোসেন এর নিকট হতে ১০% বাট্টায় ১০০০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করে ৫০% নগদে, ২০% চেকে প্রদত্ত হল।
জাবেদা দাখিলাঃ
[box type=”shadow” align=”” class=”aclass” width=””]
ক্রয় হিসাব ডেবিট ৯০০০০ টাকা
নগদান হিসাব ক্রেডিট ৪৫০০০ টাকা
ব্যাংক হিসাব ক্রেডিট ১৮০০০ টাকা
পাওনাদার(হোসেন) হিসাব ক্রেডিট ২৭০০০ টাকা।
[/box]
আরও দেখুন:
উত্তোলন সংক্রান্ত জাবেদা | উত্তোলন হিসাব সংক্রান্ত লেনদেনের জাবেদা দাখিলা প্রদান ।
জামালের নিকট পণ্য বিক্রয়
বিবিধ দেনাদার (জামাল) হিসাব ডেবিট
বিক্রয় হিসাব ক্রেডিট